সোমবার, ৩ নভেম্বর, ২০০৮

মহিমান্বিত লাইলাতুল কদর


মহিমান্বিত লাইলাতুল কদর



পবিত্র মাহে রমজানের ২৬তম দিবাবসানের মধ্য দিয়া বিশ্বমুসলিমের জীবনে অশেষ রহমত ও কল্যাণের বারতা নিয়া আসে লাইলাতুল কদর। আজ শনিবার মাগরিবের পর হইতে রাতভর ইবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমে বিশ্বাসীগণ পালন করিবেন লাইলাতুল কদর। পবিত্র কুরআনে আলস্নাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন যে, কদরের রাত সহস্র মাস হইতে উত্তম ৈলাইলাতুল কাদরি খায়রম্নমমিন আলফেশশাহর। এই রাতে সমস্তô ফেরেশতাগণ এবং জিবরাইল (আঃ) ফজর পর্যন্তô আলস্নাহর রহমত প্রার্থনায় নিরত থাকেন। আর বর্ষিত হয় আলস্নাহতায়ালার অপরিমেয় করম্নণাধারা। পবিত্র এই রাতে আলস্নাহতায়ালা প্রার্থনাকারী বান্দার জীবনের সমস্তô গুনাহ, পাপরাশি ড়্গমা করিয়া দেন। তিনি দয়াময়, তিনি পরম ড়্গমাশীল। বলার অপেড়্গা রাখে না যে, চিরকল্যাণময় পালনকর্তার ড়্গমালাভের চাইতে মানুষের জন্য বড় প্রাপ্তি আর কিছুই হইতে পারে না। যে আলস্নাহতায়ালার ড়্গমা পাইবে, নিশ্চিতভাবেই সে পাইবে ইহকাল ও পরকালের অফুরন্তô সুখ, শান্তিô ও কল্যাণ। মহিমান্বিত এই রাত্রির গুরম্নত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে ইহাই মহানবী হযরত মোহাম্মদ মোস্তôফার (সাঃ) সুস্পষ্ট ঘোষণা। সালাম বা শান্তিô মহান আলস্নাহর নিকট হইতেই আসে।’ তাহার নিকট বান্দার পরিপূর্ণ সমর্পণের মধ্যেই নিহিত রহিয়াছে পরম সুখ ও সাফল্য।

পবিত্র কুরআনে লাইলাতুল কদরের মহিমার কথা বর্ণিত হইলেও বছরের ঠিক কোন রাত লাইলাতুল কদরের রাত সে সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয় নাই। পরিষ্কারভাবে মহিমান্বিত রাত্রিটি চিহ্নিত না করিয়া দিবার পশ্চাতেও নিশ্চয়ই নিহিত রহিয়াছে মহান দয়াময়, আলস্নাহতায়ালার কল্যাণপ্রদ কোনো না কোনো অভিপ্রায়। নবী করীম (সাঃ) বিশ রোজার পর প্রতিটি বিজোড় রাত্রে লাইলাতুল কদর অন্বেষণের তাগিদ দিয়াছেন। তবে বেশিরভাগ আলেম ও ইসলামি চিন্তôাবিদগণ এই অভিমত দেন যে, ২৭ রমজান রাতে শবেকদর হওয়ার সর্বাধিক সম্ভাবনা। সেই হিসাবে এই রাতেই বিশ্বমুসলিম নফল নামাজ, জিকির, কুরআন তেলাওয়াত, দুরূদ পাঠ এবং তাসবিহ তাহলিলের মাধ্যমে লাইলাতুল কদর পালন করিয়া থাকেন। অনেকে মাহে রমজানের বিশেষ করিয়া শেষ দশকের প্রতিটি বিজোড় রাত্রে ইবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমে শবেকদর তালাশ করেন।

সন্দেহ নাই যে, লাইলাতুল কদর এক মহিমান্বিত রাত। আলস্নাহতায়ালা কুরআন শরীফে ইরশাদ করেন ৈইন্না আনজালনাহু ফি লাইলাতিল কাদরে, অর্থাৎ নিশ্চয়ই ইহা (আল কুরআন) অবতীর্ণ করিয়াছি কদর রাত্রে। দয়াময় আলস্নাহর অনুগ্রহ এবং বরকতে পরিপূর্ণ এই রাতের ফজিলত লাভের জন্য আমাদেরও সেইভাবে কায়মনোবাক্যে তাহার নিকট সমর্পিত হইতে হইবে। এই ড়্গেত্রে কৃত্রিমতা কিংবা লোক দেখানো ইবাদত-বন্দেগীর সুযোগ নাই। যারা জুলুম করে, যারা ইয়াতীম, মিসকিনদের গলা ধাক্কা দেয়, যারা লোক দেখানো ইবাদত করে এবং প্রতিবেশীর সামান্য প্রয়োজনেও যারা পাশে দাঁড়ায় না তাদের আলস্নাহতায়ালা কুরআনুল করীমে স্পষ্ট ভাষায় সতর্ক করিয়া দিয়াছেন। সংযম সাধনার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধির এক বিরাট সুযোগ হিসাবে আমাদের জীবনে আসে মাহে রমজান। ইহা আলস্নাহর বিশেষ অনুগ্রহ। সেই অনুগ্রহের সদ্ব্যবহার করিয়া আত্মশুদ্ধির সাধনায় রত থাকিয়া লাইলাতুল কদরের মধ্যে নিহিত কল্যাণ ও বরকত অন্বেষণ করা প্রতিটি মুসলমানের অত্যাবশ্যকীয় কর্তব্য। দয়াময় আলস্নাহতায়ালা আমাদের সকলকে ড়্গমা করম্নন। পরম ড়্গমায় তিনি আমাদের পুঞ্জীভূত পাপ মোচন করিয়া দিন। প্রত্যেকের জীবন সুন্দর হউক, ভরিয়া উঠুক শান্তিô ও সাফল্যেশৈবে কদরের পুণ্য রজনীতে কায়মনোবাক্যে এই হউক আমাদের প্রার্থনা।

কোন মন্তব্য নেই: