সোমবার, ৩ নভেম্বর, ২০০৮

ধর্মভিত্তিক রাজনীতি দেশে দেশে



ধর্মভিত্তিক রাজনীতি দেশে দেশে


সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের অন্যতম আলোচিত বিষয় ধর্মভিত্তিক রাজনীতি। কয়েকটি দলের জোরালো দাবি­ ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। দাবি জানানো হচ্ছে সরকার, বিশেষত নির্বাচন কমিশন সমীপে। প্রথম দিকে কিছুটা সিদ্ধাìত্মহীনতায় ভুগলেও শেষ পর্যìত্ম কমিশন সরাসরি জানিয়ে দিয়েছে এটা তাদের এখতিয়ারভুক্ত নয়। বর্তমান বাংলাদেশ সংবিধানও তা সমর্থন করে না। দেশের বিভিন্ন অবস্খায়, বিভিন্ন সমস্যায় প্রায়ই ইউরোপ-আমেরিকার উন্নত গণতান্ত্রিক দেশগুলোর উদাহরণ টেনে আনা হয়। ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বিষয়ে সেসব গণতান্ত্রিক দেশের অবস্খান কী? ধর্মীয় দল বলতে কি সেসব দেশে কিছু নেই?জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প-সাহিত্যের নিত্যনতুন আবিষ্কারের দেশ জার্মানি। গেল শতাব্দীর আলোচিত মতবাদ সমাজতন্ত্রের প্রবক্তা কার্ল মার্কস ও হেগেল জার্মানির সìত্মান। ফন্সয়েডীয় যৌনতত্ত্বের প্রবক্তা সিগময়েড ফন্সয়েড একজন সুইজ জার্মান। এ দেশেরই সìত্মান হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের নাম কে না জানে। সেই জার্মানিতে বর্তমান ‹মতাশীন দলটির নাম ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। সহযোগী আরেকটি দল ক্রিশ্চিয়ান সোসালিস্ট ইউনিয়ন। বর্তমান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল এই দলেরই নেত্রী। বহুদিন থেকে তারা জার্মানির বৃহত্তম দল হিসেবে পরিচিত। শাসন করেছে অনেক অঙ্গরাজ্য। কেউ কোনো দিন দলটিকে নিষিদ্ধের দাবি তুলেছে বলে শোনা যায়নি।ওয়েস্ট মিনিস্টার ধারার গণতন্ত্রের প্রবক্তা যুক্তরাজ্য। গণতন্ত্রের জন্য দু’টি দেশের নাম বললে যার নাম অবশ্যই আসে তার একটি যুক্তরাজ্য। সেখানে দিব্যি স্কটিশ ক্রিশ্চিয়ান পার্টি নামের দলটি বৈধভাবেই রয়েছে। তারা ২০০৪ সালে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে স্কটল্যান্ড থেকে নির্বাচন করে ১.৮ শতাংশ ভোটও অর্জন করে। ব্রিটেনের রানী অ্যাংলিকান চার্চের প্রধান। এ ছাড়া ব্রিটিশ লর্ড সভার ২৫টি আসন যাজকদের জন্য সংর‹িত।ইউরোপের অন্যতম একটি গণতান্ত্রিক দেশ নেদারল্যান্ডস। চার দলের কোয়ালিশন সরকার বর্তমানে ‹মতায় আসীন। বৃহৎ দলটি ডাচ ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। কোয়ালিশন সরকারের শরিক দলও ধর্মভিত্তিক ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ) সিডিইউ’র মূল আদর্শ খ্রিষ্টান গণতন্ত্র। দলের মূলমন্ত্রে বলা হয়েছে, বাইবেলই একজন সদস্যের অনুপ্রেরণার উৎস। সম্প্রতি কোয়ালিশন সরকার নেদারল্যান্ডস থেকে ২৬ হাজার অভিবাসী (মূলত মুসলমান) বহিষ্কার করে নিজ ধর্মীয় আনুকূল্যের পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করে।নিরপে‹তা, সমৃদ্ধি আর সৌন্দর্যের দেশ সুইজারল্যান্ড। গণতন্ত্র অত্যìত্ম শক্ত ভিতের ওপর প্রতিষ্ঠিত। এসব কারণেই হয়তো বঙ্গবìধু শেখ মুজিব বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশকে আমি এশিয়ার সুইজারল্যান্ড বানাব।’ বর্তমানে প্রায় দেড় ডজন দল পার্লামেন্টে সক্রিয়। এর মধ্যে ক্রিশ্চিয়ান পিপলস পার্টি, ক্রিশ্চিয়ান সোস্যাল পার্টি, ইভানজেলিক পিপলস পার্টি নামের তিনটি দলের মূল ভিত্তিই ক্রিশ্চিয়ান গণতন্ত্র। ক্রিশ্চিয়ান পিপলস পার্টি প্রায় ১০০ বছরের পুরনো একটি রাজনৈতিক দল। ১৯১২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই দলটি বর্তমান সরকারের কোয়ালিশন পার্টনার। এটি ২০০৩ সালে ১৫ শতাংশ, ২০০৫ সালে ২০.৭ শতাংশ এবং ২০০৭
সালে ১৪.৬ শতাংশ ভোট অর্জন করতে স‹ম হয়।
বহুদলীয় গণতন্ত্রের দেশ ইতালি। ইউরোপের অন্যতম সমৃদ্ধিশালী এবং জি-৮ সদস্যভুক্ত দেশ। অনেক বছর থেকে কোনো দলই এককভাবে ‹মতায় যেতে পারেনি। বর্তমানে প্রথম সাতটি প্রধান দলের মধ্যে ক্রিশ্চিয়ান ইউনিয়ন অন্যতম। পার্লামেন্টে এদের সমর্থক প্রায় ৩০ জনেরও বেশি সদস্য রয়েছে। আর জনসমর্থনও ৪ শতাংশের ওপরে।ইউরোপের অন্যতম ধনী ও গণতান্ত্রিক দেশ অস্ট্রিয়া। চরম ডানপন্থী আন্দোলনের নেতা ভিয়েনার মেয়র কার্ল লুগারের নেতৃত্বে ১৮৯৩ সালে গঠিত হয় ক্রিশ্চিয়ান সোস্যাল পার্টি (সিএসপি)। ১৯৪৫ সালে অস্ট্রিয়ার স্বাধীনতা লাভের পর সিএসপি নাম পরিবর্তন করে অস্ট্রিয়ান পিপলস পার্টি নাম ধারণ করে। ২০০০ সালে আরেকটি ডানপন্থী দল অস্ট্রিয়ান ফিন্সডম পার্টির সাথে কোয়ালিশন সরকার গঠন করে। মাত্র দুই বছর পর ২০০২ সালে বিপুল বিজয়ের মাধ্যমে দলটি এককভাবে আবার সরকার গঠন করতে স‹ম হয়। ধর্ম থেকে উৎসারিত এ দলটি অস্ট্রিয়ার ইতিহাসে গত সোয়া শ’ বছর প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে। এ ছাড়াও ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ডেনমার্ক, এþেত্মানিয়া, আলবেনিয়া, হাইতি, হাঙ্গেরি, লেবানন, নরওয়ে, সিরিয়া, সুইডেন, দ‹িণ আফিন্সকা, সার্বিয়া, রোমানিয়া, পানামা, পাপুয়া নিউগিনি, বলিভিয়া প্রভৃতি দেশে বিদ্যমান।বিশ্বের অভিবাসীদের অন্যতম কাáিক্ষত দেশ কানাডা। বহু দেশ থেকে প্রতি বছর নানা ধর্ম ও ভাষার হাজারো অভিবাসী আসছে এখানে। কানাডার কুইবেক রাজ্যে ২০০০ সালে রোমান ক্যাথলিকদের সহযোগিতায় গঠিত হলো ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। পার্টির মূলনীতিতে বলা হয়েছে, ‘অর্থোডক্স খ্রিষ্টীয় মতবাদ ও কুইবেক জাতীয়তাবাদের সমন্বয়ই হবে দলের প্রধান ল‹্য।’ দলটি সমকামীদের মধ্যে বিয়ে ও গর্ভপাতের ঘোর বিরোধী। এই তো কিছু দিন আগেই সমকামী আইনের প্রতিবাদে কানাডার ক্রিশ্চিয়ান, ইহুদি, মুসলিম, হিন্দু ও শিখদের ঐক্যবদ্ধ সংগঠন ইউনাইটেড রিলেজনস ফন্সন্ট চার্চ, সিনেগগ, মসজিদ, মন্দির ও গুরম্নদুয়ারা থেকে আন্দোলন পরিচালিত করল।খ্রিষ্টান মূল্যবোধের পুনর্জাগরণের þেস্নস্নাগান দিয়ে খোদ আমেরিকাতেই কাজ করছে ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন। পার্টির ওয়েবসাইটে সং‹িপ্ত পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে এভাবে­ ‘আমরা শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রের মূল ধারার দু’টি দলের বাইরে তৃতীয় শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবো। এ ‹েত্রে ইউরোপীয়ান ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটদের সাফল্য আমাদের সামনে রাখতে হবে। জার্মানিসহ ইউরোপের অনেক দেশেই তারা ‹মতাশীন।’যারা বাংলাদেশের ধর্মীয় রাজনীতি নিষিদ্ধের কোরাস গাইছেন তারা প্রধানত নিজেদেরকে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী বলে দাবি করেন। মজার ব্যাপার, সেই কাþেত্ম-হাতুড়ি মার্কা সমাজতন্ত্রের দেশ কিউবাতেও ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি কাজ করে যাচ্ছে। সমাজতান্ত্রিক দল ছাড়া অন্যান্য দলের প্রকাশ্য তৎপরতা নিষিদ্ধ থাকায় ক্রিশ্চিয়ান দলটি যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামি থেকে দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে থাকে।
বহুদলীয় গণতন্ত্রের দেশ অস্ট্রেলিয়া। রাজনীতিতে বিরাজমান ডজনখানেক ভিন্নধর্মী আদর্শের দল। নিউ সাউথ ডয়েলসেন ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি তাদের অন্যতম। বর্তমানে পার্লামেন্টে এই দলের দু’জন সদস্য আছেন। ক্রিশ্চিয়ানদের মাঝে এ দলটি নৈতিকতাবোধ সৃষ্টিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। গর্ভপাত, সমকামিতা, পর্নোগ্রাফি, সমলিঙ্গের মধ্যে বিয়ে ইত্যাদি বিষয়ের তারা কট্টর বিরোধী। ২০০৭ সালের নির্বাচনের আগে এক বক্তব্যে অস্ট্রেলিয়ার মুসলিম অভিবাসী আগমন বìেধর জন্য সরকারের কাছে আহµান জানিয়ে বেশ আলোচিত হয়েছিলেন দলনেতা ফেন্সড নিল।আমাদের নিকট প্রতিবেশী দেশ ভারত। জনসংখ্যার দিকে থেকে যাকে বলা হয় পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ। কাগজে-কলমে অবশ্য সেকুলার রাষ্ট্রও বলা হয়। হিন্দু পুনর্জাগরণবাদী রামরাজত্ব প্রতিষ্ঠার স্বাপ্নিক দলটি (বিজেপি) ৫০০ বছরের পুরনো মসজিদ ভেঙে রাতারাতি আলোচিত হলো। ১৯৮০ সালে গঠিত বিজেপি ১৯৮৪ সালে মাত্র দু’টি আসন নিয়ে যাত্রা শুরম্ন করে ১৫ বছরের (১৯৯৬) ব্যবধানে ‹মতাসীন হয়। কে না জানে, দু-দু’বার সরকার পরিচালনার পর এখন তারা দেশটির বিরোধী দলে। এটা তো গেল হিন্দু ধর্মভিত্তিক দল। এ ছাড়াও মুসলিম লীগ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, জামায়াতে ইসলামী হিন্দ নামের ধর্মীয় দলগুলোও তো রয়েছে বহাল তবিয়তে। ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ভাঙার পর কয়েকটি ধর্মীয় দলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলেও, পরে সুপ্রিমকোর্টের রায়ে সরকার এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাধ্য হয়।৮০ শতাংশেরও বেশি হিন্দু অধ্যুষিত দেশ নেপাল। ১৮ মে ২০০৬-এর আগ পর্যìত্ম ছিল পৃথিবীর একমাত্র ঘোষিত হিন্দু রাষ্ট্র। লক্ষ্মীর অবতার গরম্নকে জবাই করা রাষ্ট্রীয়ভাবেই নিষিদ্ধ, এমনকি জাতীয় পশু হিসেবেও স্বীকৃত। রাষ্ট্রীয়ভাবে ধর্মাìত্মরিতকরণও নিষিদ্ধ। কাঠমান্ডুর নৃতত্ত্ববিদ কৃষä ভট্টাচার্যের মতে, ‘নেপালের ২৪০ বছরের রাজতন্ত্র মূলত হিন্দুত্ববাদী ধারা থেকে উৎগত।’ সনাতন ধর্ম সমিতি, নেপালি জনতা পার্টি (বিজেপি’র নেপালি সংস্করণ) প্রধানতম ধর্মীয় দল, যা হিন্দুদের আম্ব্রেলা সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সদস্য।তৃতীয় বিশ্বের দেশ হয়েও যোগ্য নেতৃত্বের ফলে মাত্র দুই দশকের মধ্যে যে দেশটি উন্নয়ন ও সহনশীলতায় অনন্য নজির স্খাপন করেছে তা হলো মালয়েশিয়া। বলিষ্ঠ ও ক্যারিসম্যাটিক নেতা মাহাথির মোহাম্মদের দেশ মালয়েশিয়ায় নানা ধর্ম ও জাতির বসবাস। দীর্ঘকাল ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল পার্টি বেশ দাপটের সাথেই শাসন করে চলেছে। একমাত্র উলেস্নখযোগ্য বিরোধী দলটি (পাস) ধর্মভিত্তিক। অতীতে সেখানে তিনটি রাজ্য শাসনেরও অভিজ্ঞতা আছে দলটির। সহজ-সরল জীবনযাপনের জন্য পাসের নেতা নিক আবদুল আজিজের নাম অনেকেরই জানা।মুসলিম প্রধান দেশগুলোতেও ধর্মভিত্তিক দলের উপস্খিতি ল‹ করা যায়। আফগানিþত্মানের হেজবে ইসলামি, বাহরাইন ও ইয়েমেনে আল ইসলাহ পার্টি, মিসর, সিরিয়া, জর্ডানে ইখওয়ানুল মুসলিমিন, লেবাননে হিজবুলস্নাহ, মরক্কতে জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, সুদানে ইসলামিক ফন্সন্ট, তিউনিশিয়ায় আন নাহদাহ পার্টি, তুরস্কে সাদাত পার্টি ও ‹মতাসীন একে পার্টি, পাকিþত্মানে জামায়াত ও জমিয়তে ইসলামি উলেস্নখযোগ্য। এমনকি ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপেও ইসলামি দল আদালত পার্টি বিদ্যমান। বাþত্মবে দেখা যায়, খ্রিষ্ট প্রধান দেশগুলোতে ধর্মীয় রাজনীতি করা, ‹মতায় যাওয়া যত সহজ, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে ততটা সহজ নয়। ইখওয়ানুল মুসলিমিন মধ্যপ্রাচ্যের জনপ্রিয় দল হলেও নিষিদ্ধ করা হয় বহুবার। অবাধ, মুক্ত নির্বাচনের মাধ্যমে ৮০ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়েও ‹মতায় যেতে দেয়া হয়নি আলেজেরিয়ার ধর্মভিত্তিক দল ইসলামিক সালভেশন ফন্সন্টকে। পরাশক্তিগুলোর প্রত্য‹ মদদে ‹মতা কেড়ে নেয় সামরিক জাìত্মা (১৯৯০)। ধর্মনিরপে‹তার অজুহাতে ১৯৯৭ সালে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাফাহ পার্টির প্রধান তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী নাজিমউদ্দিন আরবাকানকে সেনাবাহিনীর হুমকিতে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।পাশ্চাত্যের সংবাদমাধ্যমের গোয়েবলসীয় প্রচারণা দেখে মনে হয় খ্রিষ্টবাদী পশ্চিমা দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল বলে কিছু নেই। শুধু তারা সমস্যা তৈরি করছে মুসলিম দেশগুলোতে। কানাডা, আমেরিকা, ইউরোপে ধর্মভিত্তিক দল এমনকি ক্রিশ্চিয়ান দল, মুসলিম দল, হিন্দু দল নামে কোনো দল আছে কি না, রাজনীতিতে নির্বাচনের আগে ধর্মের ব্যবহার কেমন হয়, ইলেকশনের আগে ক্যান্ডিডেটরা নিজেদের জনগণের মাঝে কে কত বড় প্র্যাকটিসিং ক্রিশ্চিয়ান প্রমাণ করার জন্য ব্যþত্ম হন অথবা চার্চ থেকে মিছিল বের হয় কি না, তা জানার জন্য আরো একটু পড়াশোনা করার অনুরোধ করছি। যারা বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি তুলছেন, বিগত নির্বাচনগুলোতে তাদের জনসমর্থন শূন্য দশমিক শূন্য থেকে দশমিক দুই শতাংশের মধ্যে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, গত নির্বাচনে জাসদ ০.২১ শতাংশ, ওয়ার্কার্স পার্টি ০.০৭ শতাংশ, সিপিবি ০.১ শতাংশ, সাম্যবাদী দল ০.০ শতাংশ, গণতন্ত্রী পার্টি ০.০১ শতাংশ, ন্যাপ ০.০ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। আমাদের সিদ্ধাìত্ম নিতে হবে, আমরা কাদের দিকে তাকাব­ বহুদলীয় গণতন্ত্র, মুক্ত চিìত্মা, বহু মতের চর্চা করে যারা এগিয়ে যাচ্ছে তাদের; নাকি যারা সামরিকতন্ত্র, শেখতন্ত্র, জুলুমতন্ত্রসহ সকল প্রকার একনায়কতন্ত্রের মাধ্যমে জনগণের বাক ও ব্যক্তিস্বাধীনতা হরণ করে দিন দিন অবনতির অতল গহµরে হারিয়ে যাচ্ছে তাদের দিকে।

কোন মন্তব্য নেই: