রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০০৮

মুসলমানদের পোশাক হবে

মুসলমানদের পোশাক হবে
শালীন ও রুচিসম্মত


একবিংশ শতাব্দীতে আজ সবার মাঝে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। বর্তমানে উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীদের মধ্যে এ আধুনিকতার ছোঁয়া সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়। অপ্রিয় হলেও সত্য কথা বলতে হয় এ প্রজম্মের তরুণ-তরুণীরা তাদের পোশাক-আশাকের ব্যবহার, তাদের চালচলন এবং মাথার চুলগুলো এমনভাবে রাখছে তাতে এদের দেখে চেনা বড় দায় এরা ছেলে না মেয়ে। এ প্রজম্মের উঠতি বয়সের তরুণীর পরনে জিন্স প্যান্ট, গেঞ্জি, শার্ট আবার দেখা যায় তরুণরা পরছে মাথায় মেয়েদের মতো লম্বা লম্বা চুল, কানে দোদুল্যমান দুল। আবার দেখা যায় কেউ কেউ তাদের চুলে খোঁপা বেঁধেছে। বেণী করেছে। ভাবতে অবাক লাগে ইসলাম যেখানে নারী-পুরুষদের ব্যাপারে এ মর্মে সতর্ক করে দিয়েছে, কোন নারী যেমন পুরুষের ব্যবহারযোগ্য পোশাক-পরিচ্ছদ ব্যবহার করতে পারবে না তেমনি পুরুষরাও নারীদের পোশাক ব্যবহার করতে পারবে না। লম্বা লম্বা চুল রাখতে পারবে না। ইসলাম হচ্ছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম শান্তির ধর্ম। সেই ইসলামে এসব নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। অথচ সেই নিষেধকে অমান্য করে বর্তমান যুগের মেয়েরা ছেলেদের পোশাক পরে ছেলে সাজতে চায় অন্যদিকে ছেলেরা কানে দুল পরে, লম্বা লম্বা চুল রেখে মেয়ে সেজে মনের আনন্দে ঘুরছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল ফুল যেমন আপন মনোহর রূপ এবং সৌরভ বিলিয়ে তার ফুল জম্মকে সার্থক করে তেমনি বর্তমান যুগের মেয়েরাও তাদের রূপসুধা এবং দেহের প্রতিটি বাঁক প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে পুরুষের মধ্যে যৌন উম্মদনা সৃষ্টি করে নারী জম্ম সার্থক করে চলেছে। তাই বর্তমান যুগে যেসব তরুণ-তরুণীর শরীরে অতি আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে তাদের বলব অনুগ্রহ করে আপনারা এ পন্থা পরিত্যাগ করে শালীনতা বজায় রেখে পথ চলুন। একথা মনে রেখেই পথ চলা উচিত নারী-পুরুষ শালীনতার সঙ্গে চলাফেরা করলে এবং শালীন পোশাক-পরিচ্ছদ পরিধান করলে অনেক অঘটন থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। অশালীন পোশাক ও চালচলন অনেক ক্ষেত্রেই বিপর্যয় ডেকে আনে, সমাজে অশান্তি- সৃষ্টি করে নৈতিক চরিত্রের অবক্ষয় ঘটায়। এতে মানুষ মন্দ চরিত্রের প্রতি প্রলুব্ধ হয়। এমন লোক আল্লাহতায়ালার কাছে নিকৃষ্ট। প্রিয় নবী (সা.) বলেন, আল্লাহতায়ালার কাছে ওই লোকই সবচেয়ে খারাপ, যার অশ্লীলতা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য লোকরা তাকে ত্যাগ করে। (বুখারী)

প্রিয় নবী (সা.) আরও বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা অশালীন ও দুশ্চরিত্র ব্যক্তিকে ঘৃণা করেন।’ (তিরমিজি)। হযরত লুকমান (আঃ) তার পুত্রকে শালীনতা শিক্ষা দিতে গিয়ে বলেন, অহংকারবশে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা কর না। পৃথিবীতে ঔদ্ধত্যভাবে চলো না, কেননা আল্লাহ কোন ঔদ্ধত্য অহংকারীকে পছন্দ করেন না। তুমি পদচারণা কর সংযতভাবে এবং তোমার কণ্ঠস্বর নিচু কর। প্রত্যেক মুমিন মুসলমানেরই উচিত শালীন পোশাক-পরিচ্ছদ পরিধান করা। আর মুসলমানদের পোশাক এমন হতে হবে যাতে পুরো শরীর ঢেকে থাকে। পোশাকটি হতে হবে শালীন ও রুচিসম্মত। তারা এমন ধরনের পোশাক পরিধান করবে না যাতে গলা ও কাঁধ বেরিয়ে থাকে, আবার পোশাকটি এমন পাতলা ও স্বচ্ছ হওয়া উচিত নয় যাতে শরীরের আব্র“ থাকে না, নগ্নতা প্রকাশ পায়। তাছাড়া যেসব পোশাকের কারণে অন্যরা মেয়েদের প্রতি আকৃষ্ট হয় তেমন পোশাককে সর্বোতভাবে পরিহার করতে হবে। পোশাক-পরিচ্ছদের ক্ষেত্রে ইসলামী বিধি-বিধানের অনুসরণ আবশ্যক। কোরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে ‘হে বনী আদম’ তোমাদের লজ্জাস্থান ঢাকার ও বেশভ‚ষার জন্য আমি তোমাদের পরিচ্ছদ দিয়েছি এবং তাকওয়া পরিচ্ছদই সর্বোকৃষ্ট লেবাস। পোশাকের অন্যতম উদ্দেশ্য হল সৌন্দর্য লাভ। তাকওয়া পরিচ্ছদই সর্বোকৃষ্ট বিধায় প্রত্যেক নর-নারী ও বালক-বালিকা সবার পোশাক হবে তাকওয়াপূর্ণ পোশাক, যা শালীন, মার্জিত, রুচিশীল ও শোভনীয়।

কোন মন্তব্য নেই: