শনিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০০৯

সালাতুত তাসবিহ


সালাতুত তাসবিহ


যারা আল্লাহর প্রিয় বান্দা ছিলেন যাদের প্রতিটি পদক্ষেপ আল্লাহর হুকুম এবং নবীজীর সুন্নত মোতাবেক ছিল। তারা সত্যিই আল্লাহর দরবারে নিজেদের অপরাধী, গুনাহগার, জালেম মনে করতেন। গ্রহণ করতেন তারা গুনাহ মাফের কার্যকরী পন্থা। তাই তো হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাঃ প্রতি শুক্রবার এই নামাজ আদায় করতেন। হজরত আবু জাওযা রহঃ অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে প্রতিদিন জোহরের আজানের পর জামাত শুরু হওয়ার আগে সালাতুত তাসবিহ পড়তেন।
সালাতুত তাসবিহ পড়ার নিয়মঃ সালাতুত তাসবিহ চার রাকায়াত নামাজ। প্রত্যেক রাকায়াতে ৭৫ বার করে মোট চার রাকায়াতে ৩০০ বার নিোক্ত দোয়া পড়তে হয়। ‘সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার’ অর্থঃ ‘আমি আল্লাহ তাআ’লার গুণগান কীর্তন করছি, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তাআ’লার নিমিত্ত, আল্লাহ ভিন্ন অন্য কোনো মাবুদ নাই, আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ।’ ছালাতুত তাসবিহতে উপরোক্ত দোয়া পাঠ করার ব্যাপারে হাদিস ও ফিকাহের কিতাবগুলোর মধ্যে কিছু নিয়ম আছে। প্রথমত, মনে মনে এই নামাজের নিয়ত করে আল্লাহু আকবার বলে ছানা পড়ে যথারীতি সূরা ফাতিহা এবং তার সাথে অন্য সূরা পাঠ করার পর দাঁড়ানো অবস্থাতেই ওই তাসবিহ ১৫ বার পড়বে। তারপর রুকুতে গিয়ে রুকুর তাসবিহ পড়ে রুকুতেই ওই তাসবিহ ১০ বার পড়ে রাব্বানা লাকাল হামদ বলে রুকু থেকে দাঁড়িয়ে যাবে। দাঁড়িয়ে ১০ বার ওই তাসবিহ পড়বে। অতঃপর সিজদায় গিয়ে সিজদার তাসবিহ পাঠ করার পর সিজদাতেই ১০ বার ওই তাসবিহ পাঠ করবে। সিজদা থেকে উঠে দ্বিতীয় সিজদা করার আগে বসা অবস্থায় ওই তাসবিহ ১০ বার পড়বে। এরপর দ্বিতীয় সিজদায় অনুরূপ ১০ বার এবং সিজদা থেকে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর আগে বসে ১০ বার ওই তাসবিহ পড়বে। এই হলো প্রথম রাকায়াতে ৭৫ বার তাসবিহ। অতঃপর আল্লাহু আকবার বলা ব্যতীতই দ্বিতীয় রাকায়াতের উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে যাবে এবং দ্বিতীয় রাকায়াত প্রথম রাকায়াতের অনুরূপ আদায় করবে। যখন দ্বিতীয় রাকায়াত শেষে আত্তাহিয়্যাতু পড়ার পর তাসবিহ ১০ বার পড়ে নেবে। অতঃপর আল্লাহু আকবার বলে তৃতীয় রাকায়াতের জন্য দাঁড়াবে। এরপর তৃতীয় এবং চতুর্থ রাকায়াত আগের নিয়মে আদায় করবে। এভাবে চার রাকায়াত নামাজে প্রতি রাকায়াতে ৭৫ বার করে সর্বমোট ৩০০ বার এই তাসবিহ পড়তে হবে। উল্লেখ্য, এই নামাজ জীবনের সম্পূর্ণ ছগিরা গুনাহ মাফের জন্য, কবিরা গুনাহ নয়। একবার ফরজ নামাজ না পড়লে যে গুনাহ হয়, শতবার এই নামাজ পড়লেও তা মাফ হবে না। কবিরা গুনাহ তাওবা ব্যতীত মাফ হয় না।
মাওলানা নজরুল ইসলাম তাহের

কোন মন্তব্য নেই: