শনিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০০৯

মাতৃভাষার অধিকারঃ ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি


মাতৃভাষার অধিকারঃ ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি


মা, মাতৃভূমি ও মাতৃভাষা­ মানুষের অস্তিত্বের এ তিনটি প্রধান অবলম্বন। মানুষের জীবন হচ্ছে তার মাতৃভাষা, দেশের ভাষা, জাতির ভাষা। মানুষের যতগুলো জন্মগত অধিকার আছে সেগুলোর অন্যতম হচ্ছে মাতৃভাষার অধিকার। নিজের মতো করে কথা বলার অধিকার। স্বতঃস্ফূর্ত চেতনায় স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার। এ অধিকার আল্লাহই মানুষকে দিয়েছেন। তবুও বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, যুগে যুগে এই জন্মগত অধিকার হরণ করার হীন প্রচেষ্টা চলেছে আমাদের এই স্বাধীনচেতা বীর বাঙালিদের ভূখণ্ডে। বাংলা ভাষায় হিন্দু ধর্ম চর্চা করলে রৌরব নামক নরকে যাওয়ার হুলিয়া ছিল অথচ বাংলা ভাষার প্রতি মুসলিম সুলতানদের অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা থাকার পরিপ্রেক্ষিতে দিন দিন এ দেশে বাংলার প্রভূত উন্নতি ও সমৃদ্ধি সাধিত হয়। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরে মাতৃভাষার ওপর বড় ধরনের আঘাত আসে পাকিস্তানি শাসকদের থেকে। যেই পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল বাংলা ভাষাভাষী মানুষের, সেই মানুষের জন্মগত অধিকার হরণ করে নেয়ার মতো দুঃখ আর কী ইবা থাকতে পারে! ইসলামের দৃষ্টিতে বাংলা ভাষাভাষীদের ওপর উর্দুকে চাপিয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা ছিল মারাত্মক অপরাধ। আর এ কথাটিই ১৯৪৭ থেকে জোরগলায় বলে আসছিল মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার অগ্রপথিক তমদ্দুন মজলিস। ১৯৪৭ সালের ১ অক্টোবর থেকে মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। সুসংগঠিতভাবে তমদ্দুন মজলিসই সূচনা করে­ যার বিস্ফোরণোন্মুখ বহিঃপ্রকাশ ঘটে বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারিতে।
মাতৃভাষা যে আল্লাহপ্রদত্ত জন্মগত অধিকার তার একটি প্রমাণ হচ্ছে আল্লাহতা’আলা মানুষকে লক্ষ করে ইরশাদ করেছেনঃ আর তাঁর নিদর্শনাবলির অন্যতম নিদর্শন হলো আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য। নিশ্চয়ই এতে জ্ঞানীদের জন্য রয়েছে বহু নিদর্শন। (সূরা রুমঃ ২১ আয়াত) এ আয়াতে দেখা যায়, মানুষের ভাষা ও বর্ণের বিভিন্নতা আল্লাহর সুনিপুণ সৃষ্টিকৌশলের অন্যতম সুশীলিত বহিঃপ্রকাশ। এ জন্য ভাষা-বর্ণ প্রভৃতির কারণে কোনো বিশেষ অঞ্চলের মানুষদের পর্যুদস্ত করার চেষ্টা ইসলামসম্মত নয়। ইসলামের নামে অন্যের ভাষা কেড়ে নেয়ার সুযোগ ইসলামে নেই। ইসলাম সব বর্ণের মানুষের ধর্ম। ইসলাম সব ভাষাভাষী মানুষের ধর্ম।
অতীতকাল থেকে যত ইসলাম প্রচারক এসেছেন তারা প্রধানত এখানকার মানুষের মাতৃভাষায়ই ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন। ইসলাম যেহেতু সব ভাষার ক্ষেত্রে উদার ও অকৃত্রিম, সেহেতু মুসলিম ধর্মপ্রচারকরা সব দেশে সব অঞ্চলে সব যুগে স্ব স্ব অঞ্চলের মাতৃভাষায় কুরআন-সুন্নাহর দাওয়াত তুলে ধরেছেন। হজরত আদম আঃ থেকে রাসূলুল্লাহ সাঃ পর্যন্ত এবং রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে আজ পর্যন্ত সর্বশ্রেণীর ধর্মপ্রচারকদের ক্ষেত্রে এটি সত্য।
আল্লাহ্‌র প্রেরিত প্রধান চার কিতাবও অবতীর্ণ হয়েছে প্রেরিত রাসূল ও জাতির মাতৃভাষায়। হজরত মুসা আঃ এবং তার জাতি ইহুদিদের মাতৃভাষা হিব্রু ছিল বলে তার প্রতি অবতীর্ণ তাওরাতের ভাষা ছিল ইবরানি বা হিব্রু। হজরত ঈসা আঃ ও তার জাতি খ্রিষ্টানদের মাতৃভাষা গ্রিক ছিল বলে তার প্রতি অবতীর্ণ ইনজিলের ভাষা ছিল সুরইয়ানি বা গ্রিক।

হজরত দাউদ আঃ-এর ওপর অবতীর্ণ জবুরের ভাষা ছিল ইউনানী। শেষনবী ও বিশ্বনবী মুহাম্মদ সাঃ-এর মাতৃভাষা আরবি হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর প্রতি যে কুরআন অবতীর্ণ হয় তার ভাষা আরবি। কুরআন আরবি ভাষায় নাজিল হওয়ার কারণ উল্লেখ করে আল্লাহ বলেনঃ নিশ্চয়ই আমি কুরআনকে আরবি ভাষায় নাজিল করেছি এ জন্য যে যাতে তোমরা তা বুঝতে পারো। (সূরা ইউসুফঃ ২ আয়াত)। একজন রাসূল হিসেবে মুহাম্মদ সাঃ-এর সর্বপ্রথম কর্তব্য ছিল তাঁর নিজস্ব পরিবার ও নিজস্ব জাতির কাছে দীনের দাওয়াত পৌঁছে দেয়া। তাঁর জাতি আরবদের মাতৃভাষা আরবি ছিল বলে তাঁর জাতির কাছে তার দাওয়াত আরবিতেই হওয়া যুক্তিসঙ্গত। আরবি ছাড়া অন্য কোনো ভাষায় তিনি দাওয়াত দিলে কিংবা কোনো অনারব ভাষায় কুরআন নাজিল হলে তারা কিছুই বুঝত না। তাদের হিদায়াত করা সম্ভব ছিল না। এ বিষয়ে আল্লাহ্‌তা’আলা বলেনঃ আমি যদি আরবি ভিন্ন অন্য কোনো ভাষায় কুরআন পাঠাতাম তাহলে তারা বলতঃ এর বাক্যগুলো ভালো করে বুঝিয়ে বলা হলো না কেন? সেকি! কিতাব আরবিতে নয় অথচ পয়গম্বর আরব।’ (সূরা হামিম আস্‌ সাজদাহ্‌ঃ ৪৪ আয়াত)।
আরবিতে কুরআন নাজিল হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আরবি ভাষা মহিমান্বিত হলেও কোনো ভাষাই ইসলামে উপেক্ষিত বা অবহেলিত নয়। মূলত সব ভাষা নিরপেক্ষ। কোনো ভাষার ভাষা হিসেবে কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই। ভাষার শ্রেষ্ঠত্ব হচ্ছে ওই ভাষায় অমর-অবিস্মরণীয় কীর্তির বদৌলতে। আরবদের আরবি ভাষা একদা লাত-মানাত-উজ্জা প্রভৃতি প্রতিমার স্তুতিগান, শিরক-কুফর ও অশ্লীলতায় পূর্ণ ছিল। মহানবী সাঃ ও কুরআনের আবির্ভাবে তা ইসলামের প্রধান ভাষার স্বীকৃতি লাভ করে। কাজেই ভাষার জন্য ইসলাম নয় বরং ইসলামের জন্যই ভাষা। ইসলাম কোনোভাবেই আরবি ভাষার কাছে ঋণী নয় বরং আরবি ভাষাই ইসলামের কাছে ঋণী। ঋণী ফার্সি, উর্দু, বাংলা প্রভৃতি ইসলামসমৃদ্ধ ভাষাও।

অন্য কথায় মুসলমানদের ইসলাম চর্চাই উপরিউক্ত ভাষাগুলোকে গৌরবান্বিত করেছে। আরবি ভাষাকে এক পক্ষ ধরে এবং অন্যান্য ভাষাকে আরেক পক্ষ ধরে বিচার করলে পারস্পরিক সম্পর্ক দাঁড়ায় ঊর্ধ্বমুখী ও নিুমুখী। অর্থাৎ আরবি ভাষাভাষী ধর্মপ্রচারকরা প্রথমে অন্যান্য ভাষা (যথা ফার্সি, উর্দু, বাংলা) চর্চা শুরু করছেন বলেই এসব ভাষাভাষী মুসলিমরা আরবি চর্চায় উৎসাহিত হয়েছিল। আবার বহু অনারব স্বতঃস্ফূর্তভাবেই ইসলামের টানে আরবি শিক্ষায় নিয়োজিত থাকেন এবং কালের পরিক্রমায় আরবিকেই পরিণত করেন তাদের দেশ ও জাতির মাতৃভাষায়।
হজরত মুহাম্মদ সাঃ পর্যন্ত প্রত্যেক জাতির জন্য অন্তত একজন করে নবী নির্দিষ্ট ছিল। (দেখুন সূরা ইউনুসঃ ৪৭ আয়াত) আর এই জন্যই প্রত্যেক রাসূলের ভাষা ছিল তাঁর জাতির তাঁর অঞ্চলের মাতৃভাষা। আল্লাহ্‌তা’আলা ইরশাদ করেনঃ আমি প্রত্যেক রাসূলকেই তার স্বজাতির ভাষাভাষী করে প্রেরণ করেছি তাদের কাছে পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করার জন্য। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বিভ্রান্ত করেন আর যাকে ইচ্ছা সৎপথে পরিচালিত করেন। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়, (সূরা ইবরাহিমঃ ৪ আয়াত) জাতির মাতৃভাষায় রাসূল প্রেরণ করা আল্লাহ্‌র বড় নিয়ামত। অবশ্য শেষনবী মুহাম্মদ সাঃ নির্দিষ্ট কোনো ভূখণ্ডের জন্য বা নির্দিষ্ট কোনো সময়ের জন্য প্রেরিত হননি। তিনি প্রেরিত হয়েছেন কিয়ামত অবধি বর্ণ-গোত্র-ভাষা-জাতি নির্বিশেষে সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য। তাঁর দাওয়াত সব ভাষাভাষী মানুষের জন্য গ্রহণীয়। এ ক্ষেত্রে যে প্রশ্ন দাঁড়ায় তা হলো কুরআন আরবি ভাষায় না হয়ে ইংরেজি বা বাংলা ভাষায় হলো না কেন? এর উত্তরে বলা যায়, ইংরেজি কুরআন অবতীর্ণ হলে তো ফার্সি ভাষাভাষীরা প্রশ্ন করতে পারত তা ফার্সি ভাষায় হলো না কেন? আসল কথা হচ্ছে­ সব জাতির সব ভাষাভাষীর একই কুরআন একই রাসূল পথপ্রদর্শক হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দু’টি পথ খোলা ছিলঃ এক. হয়তো সব ভাষায় কুরআন প্রেরণ করা হবে অথবা দুই. মাত্র একটি ভাষায় কুরআন প্রেরণ করা হবে। বিভিন্ন ভাষায় কুরআন অবতরণের যে প্রয়োজনীয়তা নেই তার কারণ হচ্ছে­ এ ক্ষেত্রে অনুবাদই যথেষ্ট। তা ছাড়া বিভিন্ন ভাষায় কুরআন অবতীর্ণ হলে পরিবর্তন ও মতদ্বৈধতার আশঙ্কা ছিল প্রচুর। ফলে মূল হিসেবে কোনো ভাষার কুরআনের ওপর নির্ভর করা যেত না। একই ভাষায় একই কুরআন অবতীর্ণ হওয়ায় অনুবাদ ও বিশ্লেষণে মতবিরোধ সৃষ্টি হলে মূল কুরআনের আশ্রয় নিয়ে তার সমাধান সহজতর হয়ে ওঠে।
প্রত্যেক জাতির জন্য আল্লাহ্‌তায়ালা একজন রাসূল প্রেরণ করেছেন বলে বাঙালি জাতির জন্যও একজন রাসূল এসে থাকবেন। প্রাচীনকালে এই অঞ্চলের কোনো মহাপুরুষ এই অঞ্চলবাসীর রাসূল ছিলেন তা নির্দ্বিধায় বলা যায়। তবে বাংলা ভাষাভাষী যেকোনো রাসূল আসেননি তাও নিশ্চিত করে বলা যায়। কারণ বাংলা ভাষার জন্ম রাসূলুল্লাহ সাঃ-এর জন্মের পরে হয়েছে। আর এটি সত্য যে, রাসূলুল্লাহ সাঃ-এর পরে কোনো নবী-রাসূল আসেননি, আসবেন না। তাই বলে ভাষা হিসেবে বাংলার মর্যাদা রাসূলসমৃদ্ধ ভাষার নিচে তা বলা যায় না। সব ভাষাই আল্লাহ্‌র দান, আল্লাহ্‌র সৃষ্টি। আল্লাহ্‌ মানুষ সৃষ্টির সাথে সাথে মানুষ জাতিকে ভাষাও শিখিয়ে দিয়েছেন। প্রথম মানুষ হজরত আদম আঃ প্রসঙ্গে আল্লাহ্‌ ইরশাদ করেনঃ আর তিনি (আল্লাহ্‌) আদমকে যাবতীয় নাম শিক্ষা দিলেন। (সূরা বাকারাঃ ৩১ আয়াত) জগতে কোন বস্তুর কী নাম, কার কী কাজ, কার সাথে কার কেমন সম্পর্ক­ প্রভৃতি সব বিষয়ের ভাষাজ্ঞান আল্লাহ্‌ আদম আঃ-কে শিক্ষা দিলেন। আল্লাহ্‌ অন্যত্র ইরশাদ করেনঃ আর রহমান-দয়াময় আল্লাহ্‌। তিনিই শিক্ষা দিয়েছেন কুরআন, তিনিই সৃষ্টি করেছেন মানুষ, তিনি তাকে শিক্ষা দিয়েছেন ভাষা। (সূরা আর রহমানঃ ১-৪ আয়াত)।
ইসলাম মাতৃভাষার অপরিসীম গুরুত্ব প্রদান করে বলে, জুমার নামাজের খুতবা মাতৃভাষায় হলে ইসলামের কোনো আপত্তি থাকার কথা নয়। আপত্তি নেইও মূলত। ইসলাম-বিশেষজ্ঞ বহু আলিম মনে করেন, জুমার খুতবা যদি আরবিতে দেয়া হয় এবং মুসল্লিরা যদি আরবি বুঝতে অক্ষম হন তবে মুসল্লিদের মাতৃভাষায় জুমার খুতবা দেয়া বিধিসম্মত। আর এ জন্যই বাংলাদেশের বেশ কিছু অঞ্চলে জুমার খুতবা আরবিসমেত বাংলাভাষায় প্রদান করা হয়। যারা জুমার খুতবা কেবল আরবিতে দেয়ার পক্ষে মত দেন তাদের যুক্তি হলো­ খুতবা নামাজের অংশ-নামাজ যেহেতু আরবি ছাড়া অন্যভাষায় আদায় করা যায় না, সেহেতু খুতবাও আরবি ছাড়া অন্য ভাষায় আদায় করা যাবে না। আর যারা মাতৃভাষায় জুমার খুতবা আদায়ের কথা বলেন, তাদের যুক্তি হলোঃ খুতবা বা বক্তৃতার উদ্দেশ্য হলো­ শ্রোতাদের উপদেশ দেয়া, শরিয়তের হুকুম-আহকাম বলা, তাদের সমস্যার সমাধান দেয়া। ফলে শ্রোতারা যদি বুঝতেই না পারে কী উপদেশ দেয়া হলো কিংবা সমস্যার কী সমাধান করা হলো তাহলে খুতবার মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হতে বাধ্য।
সৌদি আরবের ইসলামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দারুল ইফতার কাছে স্থানীয় ভাষায় (মাতৃভাষায়) জুমার খুতবা দেয়া যাবে কি না জিজ্ঞাসা করা হলে দারুল ইফতা জবাব দেয়ঃ
‘প্রকৃতপক্ষে জুমার খুতবা আরবি ভাষাতেই দেয়া উচিত। খতিব যদি আরবি ভাষায় খুতবা দিতে সক্ষম হন তার কিছুসংখ্যক শ্রোতা তা বুঝতে পারেন তাহলে আরবি ভাষা ব্যতীত অন্যভাষায় খুতবা দিলে গ্রহণযোগ্য হবে না।’ .... ‘আর তা না হলে অন্তত হামদ-না’ত প্রসঙ্গে আরবি শব্দ ব্যবহার করতে হবে। এরপর আরবি ভাষা ছাড়া যদি অন্য কোনো ভাষার একান্ত প্রয়োজন হয় তাহলে ওই প্রয়োজনীয় ভাষায় এর অনুবাদ করে দিতে হবে।’ (দেখুন জুমার খুতবাঃ ড. এ এইচ এম ইয়াহইয়ার রহমান) যে জুমার মুসল্লিরা আরবি ভাষা বুঝেন না তাদের আরবিতে খুতবা দেয়া হলে তাদের কোনোই লাভ হবে না। না বোঝার কারণে তখন অনেক মুসল্লি অন্যমনস্ক কিংবা তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়তে পারেন, এ ক্ষেত্রে আরবির পাশাপাশি মুসল্লিদের মাতৃভাষায় অনুবাদ ও ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করে দেয়া বাঞ্ছনীয়। ইমাম আবু হানিফা রহঃ এই কাজটি করতেন। তিনি তার প্রদত্ত জুমার আরবি খুতবা একই সাথে ফার্সিতে অনুবাদ ও ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করতেন। কারণ মুসল্লিদের মাতৃভাষা ছিল ফার্সি। বাংলাদেশের আহলে হাদিসের মসজিদে আরবি ও বাংলায় জুমার খুতবা দেয়া হয়, ইউরোপ ও আমেরিকার মসজিদগুলোতেও আরবি সমেত ইংরেজিতে খুতবা দেয়া হয়।
অধ্যাপক মাওলানা আহমদ আবুল কালাম

কোন মন্তব্য নেই: